রাঙ্গামাটিতে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ, ৩৭১ পাহাড়ধস

রাঙ্গামাটিতে পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ, ৩৭১ পাহাড়ধস

সংগৃহীত

টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি ও জুরাছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ১০ উপজেলায় ৩৭১টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (৯ আগস্ট) রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত টানা ছয় দিনে জেলার ১০ উপজেলায় ৩৭১টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫০৬ ঘরবাড়ি ও ১৮টি ব্রিজের আশপাশে ক্ষুদ্র পরিসরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১২৯৩ একর ফসলি জমি। রাঙ্গামাটির চার উপজেলার ২২ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৯টি বাজার পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলায় কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারের আশপাশের এলাকা, বাঘাইছড়ি পৌরসভার ১ থেকে ৭ নং ওয়ার্ড এবং বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মারিশ্যা ইউনিয়ন তুলাবান, আমতলী ইউনিয়নে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাঘাইছড়িতে বর্তমানে ৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়ন পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকালের দিকে রাঙ্গামাটি শহরের সিভিল সার্জন বাংলো এলাকার আশপাশে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত হয়নি।

বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র জমির হোসেন জানান, বন্যা কবলিত ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার জানান, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমি বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্র আসার জন্য অনুরোধ করেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠক পর বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করা হলে তিনি দ্রুত ২০ মেট্রিক টন খাদ্য বরাদ্দ দেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি জানান, টানা ভারী বৃষ্টিতে রাঙামাটি জেলার প্রায় ৮০টির মতো পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, টানা বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্কাউটস, রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা কাজ করছেন।