‘ভারতের ভবিষ্যত ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সাথে জড়িত’

‘ভারতের ভবিষ্যত ও নিরাপত্তা বাংলাদেশের সাথে জড়িত’

স্মিতা প্যান্ট

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ, মিয়ানমার বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা স্মিতা প্যান্ট মঙ্গলবার বলেছেন, ভারতের ভবিষ্যত, বিশেষ করে এর নিরাপত্তা বাংলাদেশের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত।তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত একসাথে অনেক কিছু অর্জন করতে পারে, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সুন্দরবনের বদ্বীপ সুরক্ষায়।

ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন স্মিতা প্যান্ট।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে অপরাধীরা তার মূল্যবোধকে নির্মূল করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু, ‘ইতিহাসে যার সমকক্ষ কম’, তার স্বপ্ন আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, জনগণ চরমপন্থা প্রত্যাখ্যান করেছে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে এবং দেশটি প্রায় অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী পাঠায়।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান আলোচনার শুরুতে বলেন, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি মডেল। সাম্য, ন্যায়বিচার, মৌলিক মানবাধিকার এবং বিশেষত আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার উপলব্ধির জন্য লড়াই করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি তার রাজনৈতিক দর্শন বিকাশ করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে জাতিসঙ্ঘে তার প্রথম ভাষণে সবার জন্য শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংগ্রামই শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য সার্বজনীন সংগ্রামের প্রতীক।’

একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত ন্যাম সম্মেলনে, যেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘যারা অত্যাচারী এবং যারা নির্যাতিত- তাদের মধ্যে পৃথিবী বিভক্ত…। যারা নিপীড়িত এবং যারা নিপীড়ন থেকে মুক্তির ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমরা তাদের পাশে আছি।’

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কিন্তু তারা এই মহান ব্যক্তির নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। তার শিক্ষা, মতাদর্শ এবং চেতনা আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে আছে।’হাইকমিশনার অনুসারে, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ একমত পোষণ করেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিসংখ্যান এখন পাকিস্তান এবং কিছু পরিস্থিতিতে ভারতের চেয়ে ভালো।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ভারতের সাথে সুসম্পর্কের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
সূত্র : ইউএনবি