করোনা: একটা রম্য রচনা

করোনা: একটা রম্য রচনা

ফাইল ছবি

মনোজ বড়ুয়া

আমেরিকার করোনা ভাইরাস ফোন করেছে বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসকে।

বাংলাদেশের করোনাঃ
ভাই, সালাম ভাই কেমন আছেন ভাই ?

আমেরিকার করোনাঃ
তুই আর কথা কইস না,
মান ইজ্জত তুই রাখলি কিছু ? তোর পারফরম্যান্স দেইখা তোরে নিজের ভাই পরিচয় দিতেও লজ্জা হয়, যেখানে আমি আমেরিকান গুলারে হোয়ায় দিতেছি আর তুই ? তোর দেশের লকডাউন পর্যন্ত তুইলা দিতেছে, ছি ছি, কি করলি তুই ভাই !!!

বাংলা করোনাঃ
ভাই আমার কি দোষ ?
এই দেশের মানুষ নিজেরাই বড় ভাইরাস ভাই, আপনি নিজে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না ভাই।
প্রথম সমস্যা হইলো ভাই এগো ভিতরে ঢুইকাতো মাংসই খুইজা পাই না।

গলা থিকা পেট পর্যন্ত ধুলার স্তর ভাই, এরা নিঃশ্বাসে অক্সিজেন নেয় না ভাই, ধুলা নেয়,
ভিত্রে সব কাদা দিয়া মাখামাখি ভাই।

আং করোনাঃ
তুই মাংস পাস না অন্য ভাইরাস কেমনে পায় ?

বাং করোনাঃ
ঘোড়ার ডিম পায় ভাই, ভিতরে ঢুইকা দেখি বড় ভাইরা সব আমারে নিয়া হাসাহাসি করতেছে ?

আং করোনাঃ
বড় ভাই কেডায় আবার ?

বাং করোনাঃ
আরে এইডস ভাই, ক্যান্সার ভাই, হাপানি ভাইরা।
বাঙালির বডির মইধ্যে ঢুইকা দেহি বড় ভাইরা সব কানে ধইরা খাড়ায় রইছে, আমারে দেইখা তারা হাসতে হাসতে কয় পুরান পাগল ভাত পায় না নতুন পাগলের আমদানি।

আং করোনাঃ
কস কি ? বাঙালির এ্যান্টিবডির এত পাওয়ার কেমনে ?
হেরাতো না খইন্না পাট্টি !

বাং করোনাঃ
ভাই বাঙালি জাতির মতো খাঅইন্না জাতি নাই ভাই, ঘুম থিকা উইঠা এগো খাওয়া শুরু, খাইতে খাইতে ঘুমায় ভাই।

কিছু না থাকলে ভাই মুড়ি নামে একটা মাল খায় ভাই, যেইটার কোন স্বাদ নাই, ঘ্রান নাই, ভিটামিন নাই ,
তাও ওগো সামনে খালি এক গামলা রাখবেন দেখবেন গরুর মতো চাবাইতেই থাকবো।

আং করোনাঃ
ফালতু বুঝ দিবিনা তুই আমারে। এতো খাইলে ওগো দেশে এতো রোগ বালাই কেন ? এতো হাসপাতাল কেন ?

বাং করোনাঃ
ভাই খায়তো সব ভেজাইল্লা খাওন। পোড়া তেলে ভাজা, ধুলায় ভাজা, মাছিতে হাগা, পচা জিনিস খায় ভাই।

আর ফরমালিন ছাড়াতো কোন খাওয়নই নাই। ওগো এ্যান্টিবডি জন্মের পর থিকা খালি মারামারি কিলাকিলির মইধ্যে বড় হইছে ভাই।

আমি ঢুইকা কিছু কইও নাই এ্যান্টিবডি আইসাই আমারে থাপড়ান শুরু করছে ভাই। ওগো এ্যান্টবডি খুব ডিস্টার্বড ভাই।

আং করোনাঃ
কস কি ? এতো ডেনজারাস জাতি...

বাং করোনাঃ
ডেনজারাস কি দেখ্ছেন ভাই, এই খানে একটা ডিস্টিক আছে, নাম নিলে মামলা করবো, নাম না নেই, ওই ডিস্টিকে খালি কোপাকুপ ভাই।

আং করোনাঃ
খাইছেরে !! এতো দেখি পুরা কোপাকুপি জাতি।
আচ্ছা বুঝতে পারছি ভাই, কিন্তু তবু একটু দেখ মানে...

বাং করোনাঃ
ভাই চেষ্টাতো কম করতাছি না, কিছু কিছু ঘটনা ঘটে এগুলো দুনিয়ার অন্য কোন করোনা ভাইর ফেইস করতে হয় নাই ভাই।

ওইদিন ভাই এক করোনা ভাইরাস অনেক কষ্টে একজনের মাস্কে বসছে মাত্র, ভাইরে ভাই এমন গন্ধ মাস্কে, গন্ধেই সেই ভাইরাস ভাই মইরা গেছে।

আং করোনাঃ
কস কি ? ?
এত গন্ধ ?
কেন এতো গন্ধ কেন ?
হালারা দাত মাজে না ?

বাং করোনাঃ
ভাই দাত রেগুলার মাজে কিনা জানি না, তয় বাসায় সবাই ভাই এক মাস্ক ব্যাবহার করে ভাই।

বাপে মাস্ক পইরা বাজারে যায়, বিড়ি খাইতে খাইতে বাসায় আহে, আহার পর পোলায় হেই মাস্ক পইরা আবার গার্লফ্রেন্ডের লগে দেখা করতে যায়, আইলে মায়ে আবার হেই মাস্ক পইরা বইনের বাড়িৎ যায়,

বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা ভাই, এইডা যে ছাতা বদনা না হেগো কে বুঝাইবো।

আং করোনাঃ
ভাইরে ভাই, শুইনাই তো আমার বমি আসতেছেরে।

বাং করোনাঃ
ভাই এগুলা কিছু না, ওইদিন এক করোনা ভাইরাস একজনের মুখে মাত্র ঢুইকা আমারে কল দিছে, ২ ঘন্টার মধ্যে সেই ভাই মারা গেল।

আং করোনাঃ
কেন ? গন্ধে ?
গন্ধওয়ালা মাস্ক পরছিল ?

বাং করোনাঃ
না ভাই, এইখানে একটা নদী আছে নাম বুড়িগঙ্গা। ওই নদীর পানি দিয়া কুলকুলি করছিল ভাই।

আং করোনাঃ
কস কি ? নদীর পানি দিয়া কুলকুলি করলে আমরা মরবো কেন, আমরা কি এতোই দূর্বল ব্যাটা ?

বাং করোনাঃ
ভাই দুনিয়ার এমন কোন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস নাই যেগুলা এই নদীর পানিতে নাই।

পানি না বইলা ভাই আপনি কইতে পারেন এইটা ভাইরাস আর ব্যাকটেরিয়ার জুস !!

সেই পানি দিয়া এই জাতি গোসল করে কুলকুলি করে ভাই। আর আপনি আমারে কন আমরা কি করতেছি ?
জীবনের ঝুকিতে পড়ছি ভাই এই দেশে আইসা।

আং করোনাঃ
ভাইরে ভাই, এ কোন জাতি!!! ভাই তোর উপর আর কোন রাগ অভিমান নাই, তুই বাইচা আছোস ওই দেশে এইতেই আমি খুশি।

সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন ।
আসুন আমরা যতটুকু পারি বাসায় থাকি
না পারতে ঘরের বাহির না হই। আর প্রচুর হাসতে থাকুন। কেউ পাগল বল্লেও থামবেন না।

সংগ্রীহিত