দেশে এখনও নিরক্ষর প্রায় ২৩ শতাংশ

দেশে এখনও নিরক্ষর প্রায় ২৩ শতাংশ

ফাইল ছবি

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ৮ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। ইউনেস্কো কর্তৃক নির্ধারিত এ বছর সাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সামজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্টাটিস্টিক ২০২২’ সর্বশেষ সাত বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭৬.৮ শতাংশ।  

১৯৭২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যে সংবিধান প্রণীত হয় তার ১৭নং অনুচ্ছেদে দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণ এবং শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সাক্ষরতা বিস্তারে ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। ১৯৭৩ ঠাকুরগাঁওয়ে সাক্ষরতা অভিযান শুরু হয়। ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের প্রধান অনুষ্ঠানটি হয় ঠাকুরগাঁয়ে। এ দিনে ঠাকুরগাঁ-এর কচুবাড়ী-কৃষ্টপুর গ্রামকে বাংলাদেশের প্রথম নিরক্ষরতামুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।  

বর্তমান সরকারের নানামুখী কর্মসূচির কারণে পূর্বের তুলনায় সাক্ষরতার হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনও প্রায় ২৩.২ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিরক্ষর। শতভাগ জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দিতে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।  

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, সাক্ষরতা ও উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। এর একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি চিন্তা করা যায় না। সাক্ষরতা অর্জনের মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ে, মানুষ সচেতন হয় স্বনির্ভর হয় দেশে জন্মহার এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস পায়, স্বাস্থ্য সূচকের উন্নয়ন ঘটে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে। সর্বোপরি পরিবার, একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে সাক্ষরতার কোনো বিকল্প নেই।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞানদান, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকায়ন, দক্ষ মানবসম্পদে পরিণতকরণ, আত্ম-কর্মসংস্থানের যোগ্যতাসৃষ্টিকরণ এবং বিদ্যালয় বহির্ভূত ও ঝরেপড়া শিশুদের শিক্ষার বিকল্প সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশে সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকার ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০২১-২০২৫) উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা খাতের জন্য তিনটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।  

সেগুলো হলো: ৩৩.৭৯ মিলিয়ন কিশোর-কিশোরী ও বয়স্ক নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে মৌলিক সাক্ষরতা প্রদান করা; মৌলিক সাক্ষরতা অর্জনকারী ৫ মিলিয়ন নতুন সাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিকে কার্যকর দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা; উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বোর্ডকে কার্যকর করা।  

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে মহাখালীতে উপানুষ্ঠানিক ব্যুরো মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ।