অবরোধ: কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

অবরোধ: কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

সংগৃহীত

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রবিবার ভোর ৬টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এ অবরোধে সমর্থন জানিয়ে দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোও এ কর্মসূচি পালন করবে। এদিকে জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

বিএনপি-জামায়াতের এ কর্মসূচি ঘিরে নাশকতা এড়াতে ঢাকাসহ সারাদেশে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো। 

বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের আগেই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৪ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর চার স্থানে চারটি বাসে চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সিটি সেন্টারের সামনে সামনে গ্রিন ইউনিভার্সিটির একটি বাসে, নিউমার্কেটের গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মিরপুর লিংক পরিবহনের একটি বাসে, সায়দাবাদ জনপথ মোড় ফ্লাইওভারের নিচে একটি বাসে এবং গুলিস্তানের পাতাল মার্কেটের সামনে মঞ্জিল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।

অপরদিকে, অবরোধে ঢাকায় গণপরিবহন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। একইসঙ্গে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল করবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক গোলাম সামদানী বলেন, আগের মতই গাড়ি চলাচল করবে। অবরোধে কোনো গাড়ি বন্ধ থাকবে না। যদিও যাত্রীর ওপর নির্ভর করবে লঞ্চ চলাচল। তবে বন্ধ থাকবে না বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।

এদিকে, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির নামে রাজধানীসহ সারাদেশেই চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সব কিছু মাথায় রেখেই রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। যেকেনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, বিজিবি সদস্যরা। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গাতে টহল শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, অবরোধের নামে কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা বা জনগণের জানমালের ক্ষতি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

রাজধানীসহ সারাদেশেই পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‌্যাবের সবগুলো ব্যাটালিয়ন রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ পুরো নগরীতেই রাখা হবে র‌্যাবের চেকপোস্ট, টহল টিম ও পেট্রোলিং। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র‌্যাব।

তিনি বলেন, দেশব্যাপী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব ফোর্সেসের ১৫টি ব্যাটালিয়নের তিন শতাধিক টহল নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারী কার্যক্রম চলমান থাকবে। কেউ যদি কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতার পরিকল্পনা করে তাকে সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।