জরায়ুতে টিউমার আছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে

জরায়ুতে টিউমার আছে কি না বুঝবেন যে লক্ষণে

ছবিঃ সংগৃহীত।

বেশি বয়সে সন্তান ধারণ করতে গিয়ে অনেক নারীই সমস্যার সম্মুখীন হন। আর এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ হলো জরায়ুর টিউমার। বিনাইন টিউমারকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ফাইব্রয়েডস। সাধারণত ২১-৫০ বছর বয়সী নারীদের জরায়ুতে এ ধরনের টিউমারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

 

ফাইব্রয়েডস মূলত তিনটি জায়গায় তৈরি হতে পারে। প্রথমত জরায়ুর দেওয়ালের বাইরের দিকে, যাকে সাবসেরাস বলে। দ্বিতীয়ত জরায়ুর দেওয়ালের মধ্যে, যাকে ইন্ট্রামিউরাল বলে ও তৃতীয়ত জরায়ুর যে অংশ থেকে ঋতুস্রাব হয়, তাকে বলা হয় সাব-মিউকাস।

বেশির নারীই সাব-মিউকাস ফাইব্রয়েডসে আক্রান্ত হন। ঋতুস্রাবের সময়ে পেটে তীব্র যন্ত্রণার অন্যতম কারণ হলো এই সাব-মিউকাস ফাইব্রয়েডস। এর ফলে অত্যধিক রক্তক্ষরণ হয় ও অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যাও শুরু হয়। জরায়ুতে এই টিউমার থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকিও বেড়ে যায় কয়েক গুণ।

কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

 

অনিয়মিত ঋতুস্রাব, অত্যধিক রক্তপাত ও গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দিলেই ফাইব্রয়েডস আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। অনেক নারীই ঋতুস্রাবের যন্ত্রণাকে অবহেলা করেন, যন্ত্রণা কমাতে পেইনকিলার খান। তবে এই অবহেলা কিন্তু বড় বিপদ ডাকতে পারে।

এছাড়া হঠাৎ পেট ফুলে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যও কিন্তু ফাইব্রয়েডসের লক্ষণ হতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৭-৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার জরায়ুর আকার যেমন হয়, এক্ষেত্রেও পেটের আকার তেমনই হয়ে যায়। এছাড়া প্রস্রাবের হার বেড়ে যাওয়া, প্রস্রাবের সময়ে তীব্র যন্ত্রণা, তলপেটে ব্যথাও এই রোগের অন্যতম কিছু লক্ষণ।

 

কাদের ঝুঁকি বেশি?

 

জরায়ুর ফাইব্রয়েডের সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে কয়েকটি কারণ থাকলে এ রোগের ঝুঁকি বেশি। যদি পরিবারে কোনো নারীর এ ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে আপনার মধ্যেও এ রোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।

ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন ঋতুস্রাবের সময়ে জরায়ুর লাইনিং, অর্থাৎ আবরণকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে ফাইব্রয়েড তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এসব নারী হরমোনই ছোট ফাইব্রয়েড বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এ কারণেই সন্তানধারণের ক্ষেত্রে ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

এই রোগে অতিরিক্ত রক্তপাতের ফলে শরীরে রক্ত স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়ারও ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে নারীদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকেরও ঝুঁকি বাড়ে।

ফাইব্রয়েড হলে কিডনির কার্যকারিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারও কারও আবার ফাইব্রয়েড থেকে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এ সমস্যা নির্ণয়ে দেরি না করে উপরোক্ত লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।