ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত রাম রহিমকে হত্যা মামলায় খালাস

ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত রাম রহিমকে হত্যা মামলায় খালাস

ছবি: সংগৃহীত

ধর্ষণ মামলায় দণ্ডিত ডেরা সাচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে ডেরার সাবেক আধিকারিক হত্যা মামলায় খালাস দিয়েছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (২৮ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, ২০০২ সালে ডেরার রাজ্য পর্যায়ের একটি কমিটির সদস্য রণজিৎ সিংকে হত্যার সঙ্গে রাম রহিম সিং জড়িত ছিলেন। রণজিৎ সিংকে গুলি করা হত্যা করা হয়। তবে রাম রহিম সিং বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রণজিৎ হত্যার অভিযোগে যে মামলাটি দায়ের করা হয়, সেখানে অভিযোগ করা হয়— একটি বেনামি চিঠিতে ফাঁস করা হয়েছিল যে, রাম রহিম সিং তার ডেরায় নারীদের যৌন নিপীড়ন করতেন। আর এই চিঠি ফাঁসের ক্ষেত্রে রাম রহিম সিংয়ের ইঙ্গিত ছিল রণজিতের বিরুদ্ধে।

এর আগে, ২০২১ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের একটি আদালত রাম রহিম সিং এবং অন্য চারজনকে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।

সিবিআইয়ের বিশেষ সেই আদালত বলেছিলেন, যুক্তিসংগত ও সন্দেহাতীতভাবে এটি প্রমাণিত যে ডেরাপ্রধান চিঠিটির কারণে সংক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে মিলে রণজিৎ সিংকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলেন।

সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে গুরমিত সিং রাম রহিম হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন। সেই আপিলের কার্যক্রম শেষে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট রাম রহিম সিংসহ বাকি চারজনকেও খালাস দিয়েছেন।

তবে এই মামলায় খালাস পেলেও তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। কারণ, রাম রহিম তার ডেরায় দুই বিবাহিতা নারীকে ধর্ষণ ও সাংবাদিক রাম চন্দর প্রজাপতির হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। সাংবাদিক রাম চন্দর প্রভাবশালী এই ডেরাপ্রধানের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো নিয়ে ব্যাপকভাবে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন।

সংবাদ প্রকাশের পরে সিবিআই বিষয়টির তদন্ত শুরু করে। তদন্ত শুরু হওয়ার এক দশক পর ২০১৪ সালে রাম রহিম দাবি করেন যে, তিনি নপুংসক। কিন্তু আদালত তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে ২০১৭ সালে রাম রহিম সিংকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত দণ্ডাদেশ দেন।

তার দণ্ডাদেশের পর ভারতের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জন মারা যান এবং ২৫০ জনের বেশি আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ডাকা হয়।

বর্তমানে ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন রাম রহিম এবং উচ্চ আদালতে এই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ করেছেন তিনি।