চিকিৎসকের ভুলে আরেক চিকিৎসকের মৃত্যুর অভিযোগ

চিকিৎসকের ভুলে আরেক চিকিৎসকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

ফেনীতে অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে ভুলের কারণে একজন নারী চিকিৎসকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি গত শুক্রবার রাতে ঘটলেও ফেনী প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করে সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলে। একপর্যায়ে ঘটনা জানাজানি হলে সর্বমহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

নিহতের স্বজনরা জানায়, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া নিজ জন্মভূমি হলেও ঢাকাতেই বসবাস করতেন ডা. আকিফা সুলতানা টুম্পা। ঢাকা থেকে ফেনীতে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি করতে আসেন তিনি। কিন্তু ফেনীতে চিকিৎসা নিতে আসাই কাল হল তার। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস।

জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ জুন) রাতে ফেনী প্রাইভেট হাসপাতালে ল্যাপারোস্কপিক সার্জারি করতে অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগের পর ডা. আকিফা সুলতানা টুম্পা নামে ওই নারী চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে তাকে চট্টগ্রাম এবং সেখানে থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উক্ত প্রতিষ্ঠানটি ল্যাপরোস্কপিক সার্জন প্রফেসর ডা. কাইয়ুমের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ফেনী প্রাইভেট হাসপাতাল।

অভিযোগ রয়েছে, ডা. আবদুর রহমান নামে চট্টগ্রাম থেকে আসা একজন অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করে প্রথমে ব্যর্থ হন। পরে আবার চেষ্টা করলে ডা. আকিফা সুলতানার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। খবর পেয়ে তার সহকর্মী ফেনী সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আসিফ ইকবাল, ডা. নিলুফা সুলতানা, ডা. আরিফুর রহমান অনেক চেষ্টা করলেও তার পেশার না বাড়ায় ফেনী আধুনিক জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করান।

সেখানেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না দেখে ডা. আকিফার স্বজনরা তাকে প্রথমে চট্টগ্রাম এভার কেয়ার হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।

বিষয়টি জানাজানি হলে চিকিৎসক ও ডা. আকিফা সুলতানার স্বজনরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এরপর ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের নির্দেশে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন।

বিষয়টি তদন্তে রবিবার ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন অফিস। গঠিত কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে সিভিল সার্জন বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

কমিটিতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. জালাল হোসেনকে সভাপতি করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. মো. কামরুজ্জামান, দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. তাহিরা খাতুন ও জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. মো ইলিয়াছ ভূঞা।

এ বিষয়ে জানতে ফেনী প্রাইভেট হাসপাতালটির মালিক প্রফেসর ডা. কাইয়ুমকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. শিহাব উদ্দিন জানান, ফেনীতে ল্যাপরোস্কপিক অপারেশন করতে আসা ডা. আকিফা সুলতানা টুম্পার মূত্যুর ঘটনায় আমি ব্যথিত। এ ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।