গঠনতন্ত্রের আধুনিকায়নে জোর দিচ্ছি: সৈয়দ শাকিল

গঠনতন্ত্রের আধুনিকায়নে জোর দিচ্ছি: সৈয়দ শাকিল

ছবি: সংগৃহীত

গেল ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রাষ্ট্র সংস্কার যাদের মূল লক্ষ্য। এরপর থেকে সকল খাতেই চলছে সংস্কার কার্যক্রম। নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ‘ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ’-এও লেগেছে হাওয়া। গঠন করা হয়েছে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটি’। নেতৃত্বে আছেন কমিটির আহ্বায়ক নির্মাতা সৈয়দ শাকিল। 

ডিরেক্টরস গিল্ডের সংস্কার প্রসঙ্গে শাকিল বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের সভায় আমাদের মূলত তিনটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গঠনতন্ত্রের সংশোধন। সংগঠনে নিবন্ধন নবায়ন বিষয়ক জটিলতা সমাধান। যারা এরমধ্যে সদস্য হয়েছেন এবং যেসব আবেদন প্রক্রিয়াধীন সেগুলো যাচাই-বাছাইকরণ। সেইসঙ্গে পুরনো সদস্যদের পুনর্মূল্যায়ন। কেননা তাদের অনেকেই বিদেশে থিতু হয়েছেন। কেউ কেউ নানা কারণে সময় দিতে পারছেন না। এই তিনটি বিষয় সংস্কার করাই কমিটির দায়িত্ব। সেইসঙ্গে বিগত আঠারো মাসে যে অব্যবস্থাপনা হয়েছে সেগুলো নিয়ে আমরা একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এছাড়া সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কিছু সুপারিশ দেব।’

তবে ইন্ডাস্ট্রি ফ্রেন্ডলি অ্যাটমোস্ফিয়ার পেতে সকলের সমন্বয় চান এ আহ্বায়ক। তার কথায়, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। নিজস্ব ভাবনা থেকে মনে করি, শুধু ডিরেক্টরস গিল্ড, শিল্পী সমিতি, প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি ফ্রেন্ডলি অ্যাটমোস্ফিয়ার তৈরি সম্ভব না। সঙ্গে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন রাখতে হবে। এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আছে। তাদেরও নিতে হবে। সবার সমন্বয়ে একটি ফেডারেল বডি গঠন করা উচিত। তবেই শিল্পবান্ধব পরিবেশ সম্ভব। কেননা আমাকে কোনোকিছু বাস্তবায়ন করতে গেলে শিল্পী, পরিচালক, বিনোদন সাংবাদিক লাগবে। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে যে বাংলা নাটকের গ্রুপগুলো আছে তাদেরও অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। কিছু করলে সবাইকে নিয়ে করতে হবে। আমরা একে অন্যের পরিপূরক। শিল্পী ছাড়া শুটিং করা সম্ভব না। প্রডিউসার ছাড়া অর্থায়ন সম্ভব না। সেকারণে এখানে সমন্বয় দরকার।’

সৈয়দ শাকিল যোগ করেন, ‘আগে আমাদের তিন সংগঠনের একটি দ্বি পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক ছিল। এটাকে আরও আধুনিক কীভাবে করা যায় সেটা ভাবতে হবে।’

সংগঠনের গঠনতন্ত্র আধুনিকায়নে জোর দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত শাকিল। তার ভাষ্য, ‘সংগঠনের গঠনতন্ত্রের আধুনিকায়নে জোর দিচ্ছি। যেন আজকের কাজের সুফল পাঁচ বছর পরে যারা আসবে তারাও পায়। বর্তমানকে ভেবে কাজ করলে হবে না। পাঁচ বছর পর বাজার কোথায় যাবে সেটা ভেবে কর্ম পরিকল্পনা সাজাতে হবে। কেননা আমরা যখন টেলিভিশনে কাজ করতাম তখন কিন্তু জানতাম না ফেসবুক, ইউটিউব, ওটিটি মাধ্যম আসবে। একইরকম আগামী পাঁচ বছর পর কী আসবে সেটাও জানি না। সে কারণে সেটা ধরেই একটি কর্মপরিকল্পনা সাজাতে হবে। আমি আবারও বলছি আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিল্প বান্ধব পরিবেশ। এটা এককভাবে সম্ভব না। সব সংগঠনগুলো মিলে একটি সার্বিক রূপরেখা করতে হবে। পরবর্তী নির্বাচিত প্রতিনিধি যারাই আসুক তারা যেন এটা ধরে আরও আধুনিক করে বাস্তবায়ন করে বা কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।’

সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটিকে দেওয়া হয়েছে দুই মাস। বেঁধে দেওয়া সময়ে দায়িত্ব সম্পন্ন করা সম্ভব কি না— জানতে চাইলে এ আহ্বায়ক বলেন, ‘সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও এর আগে সময় বেঁধে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। তবে আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দায়িত্ব সম্পন্ন করতে পারব। কেননা সংস্কার আমাদের জন্য নতুন কিছু না। কীভাবে করতে হয় জানি। আমি মনে করি না এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে। কারণ যারা আছি আমরা সবাই সহকর্মী। ইন্ডাস্ট্রি ফ্রেন্ডলি অ্যাটমোস্ফিয়ার সবার কাম্য। নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্বটা পালন করলে নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী।’

গত শনিবার বেইলি রোডে গাইড হাউস মিলনায়তনে ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ-এর বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সংগঠনের গঠনতন্ত্র সংশোধন, সদস্য যাচাইবাছাই ও পুনর্মূল্যায়নের জন্য উপস্থিত সাধারণ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে নির্মাতা সৈয়দ শাকিলকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট ‘অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটি’ গঠন করা হয়।

কমিটির সদস্যরা হলেন- চয়নিকা চৌধুরী, সকাল আহমেদ, ফরিদুল হাসান, এহসানুর রহমান, ইমরাউল রাফাত, তুহিন হোসেন, মোস্তফা মনন, মাহমুদ নিয়াজ চন্দ্রদ্বীপ, ফেরারী অমিত, রাজিব সালেহীন, মনিরুজ্জামান লিপন, জাকিউল ইসলাম রিপন, শাহনেওয়াজ রিপন ও খলিলুর রহমান নয়ন।