মৌসুমে ইলিশের নতুন প্রাপ্তি, আশানুরূপ ফলে জেলেরা খুশি— দাম কি কমবে?

মৌসুমে ইলিশের নতুন প্রাপ্তি, আশানুরূপ ফলে জেলেরা খুশি— দাম কি কমবে?

ছবি: সংগৃহীত

টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে রোববার মধ্যরাত থেকে আবারও ইলিশ শিকারে নেমেছেন ভোলাসহ উপকূলের জেলেরা। সাধারণত ভোলা ও বরিশালের বিভিন্ন মাছঘাটে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ মণ ইলিশ আসে, তবে এবার নিষেধাজ্ঞার পর ২,০০০ মণ ইলিশ উঠেছে, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ১০ গুণ বেশি।

সরেজমিনে ভোলা সদর, চরফ্যাসনসহ বিভিন্ন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, মৎস্য ব্যবসায়ীরা ব্যস্তভাবে মাছ সংগ্রহ করছেন। কেউ বরফ প্রস্তুত করছেন, কেউ ঝুঁড়ি প্রস্তুত করছেন, আবার কেউ মাছের দাম হাঁকাচ্ছেন। জেলেরা সারারাত নদীতে মাছ ধরে ভোরবেলা মাছ নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন।

তবে, বেশ কিছু ক্রেতা অভিযোগ করেছেন—বাজারে আসা বেশিরভাগ ইলিশের রং কিছুটা বিবর্ণ, আর অনেকের পেটে ডিমও রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি নিষেধাজ্ঞার সময় ধরে রাখা মাছ। কিন্তু জেলেরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, তারা নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নেমে নতুন ইলিশ ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

এবারের অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিন টনের বেশি হতে পারে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব
তারা আরও জানান, এবারের অভিযান সফল হওয়ায় নদীতে অবৈধ জাল কম পড়েছে, ফলে মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পেরেছে। তাই এখন অনেক বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে, ভোলা শহরতলীর শিবপুর ও নাছির মাঝি মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক ইলিশ ধরা পড়লেও সেগুলোর আকার ছোট। বড় সাইজের ইলিশের দেখা মিলছে না। স্থানীয় বাজারগুলো ছোট ইলিশে সয়লাব, আর সেগুলো বিক্রি করে জেলেরা লাভবান হচ্ছেন। আড়তদাররা বলছেন— কয়েকদিন পর বড় ইলিশ পাওয়া যেতে পারে।

এই ইলিশের প্রাচুর্য্যে জেলেরা যেমন আনন্দিত, তেমনি তারা লোকসান কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছেন। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, এবারের অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিন টনের বেশি হতে পারে।

এভাবে, নিষেধাজ্ঞার পর এখন ইলিশের প্রাচুর্য্য দেখে জেলেরা আশা করছেন, পরবর্তী দিনগুলোতে আরও ভালো মাছ ধরা পড়বে। তবে, বাজারে এখনো বড় সাইজের ইলিশের অভাব থাকায় দাম কমার সম্ভাবনা কম বলে মনে হচ্ছে।