শীতের নির্জীবতা দূর করে যে খাবার

শীতের নির্জীবতা দূর করে যে খাবার

শীতের নির্জীবতা দূর করে যে খাবার

শীতের সময়ে মলিন আবহাওয়ায় উদাসীন মন ঠিক করতে সহায়তা করে বিশেষ কিছু খাবার। শীতে কুয়াশার মতো মনের ওপরেও উদাসীনতার ছায়া পড়ে, যা ‘উইন্ড ব্লুজ’ নামে পরিচিত। এই সময়ে অনেকেরই মনের ভেতরের প্রাণবন্ততা হ্রাস পায়। ফলে মুখ ভার থাকা, কোনো কিছুতে উৎসাহ না পাওয়া বা নির্জীব ভাব দেখা দেয়।

‘আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন’য়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, নির্জীব ভাবকে বলা হয় ‘সিজোনাল এফেক্টিভ ডিজঅর্ডার’ (স্যাড), যা ঋতু পরিবর্তনের কারণে হওয়া একধরনের উদ্বেগ হিসেবে পরিচিত। মহামারীর এই সময়ে অনেকের ক্ষেত্রেই এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণের পেছনে রয়েছে আবহাওয়ার পরিবর্তন, ভিটামিন ডি’র স্বল্পতা, সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিনের মাত্রার তারতম্য ইত্যাদি।

 যুক্তরাষ্ট্রের নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় পাঁচ শতাংশের ওপর ‘স্যাড’য়ের প্রভাব রয়েছে বলে লক্ষ করেছে, ‘আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন’। এই লক্ষণগুলো সাধারণত শীতকালে বেশি দেখা দেয় এবং বসন্তের দিকে এর প্রভাব কমতে থাকে। ‘স্যাড’য়ের প্রভাব কমাতে ‘লাইট থেরাপি’ বা অ্যান্টিডিপ্রেশন ধরনের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক বিশেষজ্ঞই। তবে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।‘স্যাড’য়ের প্রভাব কাটানোর কয়েকটি খাবার হলো :

শস্যজাতীয় খাবার : দিনের শুরুতে নাশতায় শস্যজাতীয় খাবার খাওয়া মানুষের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদ জুলিয়ান ট্যামায়ো বলেন, ‘অধিকাংশ আঁশজাতীয় খাবার উচ্চ আঁশ, ভিটামিন বি ১২ এবং ফলিক এসিড-সমৃদ্ধ, যা উদ্বেগ কমাতে ও মন ভালো রাখতে সহায়তা করে।’ অন্য দিকে আঁশ অন্ত্রের উপকারী অণুজীবের পরিমাণ বাড়ায়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ব্যাখ্যা দিয়ে ট্যামায়ো বলেন, ‘ভিটামিন বি ১২ স্নায়ুর জন্য উপকারী। এর অভাবে রক্ত স্বল্পতা ও অলসভাব বৃদ্ধি পায়। ফলিক এসিড কোষকে প্রাণবন্ত ও পুনর্গঠন করতে সহায়তা করে, যা মানুষের মন ভালো রাখে ও তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

মাছ : সামুদ্রিক মাছ খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।ট্যামায়ো বলেন, ‘লিন প্রোটিন’ খাওয়া ‘উইন্টার ব্লুজ’ কমাতে সহায়তা করে। এতে থাকা প্রোটিনের মাত্রা বেশি, যা হজমে কোনোরকম বাধা বা প্রদাহ সৃষ্টি করে না। এতে থাকা ফ্যাটি এসিড ‘স্যাড’য়ের বিপক্ষে খুব ভালো কাজ করে। উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি এসিড, ওমেগা থ্রি প্রদাহ কমাতে এবং মস্তিষ্কের তীক্ষèতা বাড়াতে সক্ষম।’

টফু : অনেকেই নিরামিষভোজী। প্যাসিফিক অ্যানালিটিক সুশান কেলি বলেন, ‘‘দেহে লৌহের মাত্রা ভারসাম্যতা উদ্বেগের সাথে জড়িত। এর মাত্রা কমে যাওয়া ‘উইন্ড ব্লুজ’ ও উদ্বেগের মাত্রা বাড়ায়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে লৌহের প্রয়োজন। টফু লৌহসমৃদ্ধ। তাই খাবার তালিকায় এটা রাখা উপকারী।’’

ডার্ক চকলেট : চকলেটের কথা শুনলেই অনেকের মাথায় প্রথমেই আসে শর্করা। তবে উদ্বেগ কমানোর ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট খুব ভালো কাজ করে। হতাশা বা উদ্বেগ কমাতে ডার্ক চকলেট কার্যকর বলে জানান, ট্যামায়ো। গবেষণায় দেখা গেছে, ডার্ক চকলেট ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে খনিজ উপাদান যা উদ্বেগের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।