শেষ ষোল নিশ্চিত করল সুইজারল্যান্ড

শেষ ষোল নিশ্চিত করল সুইজারল্যান্ড

ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পর জি গ্রুপ থেকে নকআউট পর্বে জায়গা করে নিল সুইজারল্যান্ড। আজ ৩-২ গোলে সার্বিয়াকে হারিয়ে সর্বশেষ দল হিসেবে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয় সুইসরা।

শেষ ষোলতে জায়গা করে নিতে দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ জি গ্রুপের শেষ খেলায় মুখোমুখি হয়েছিল সুইজারল্যান্ড ও সার্বিয়া। এই গ্রুপ থেকে আগেই নকআউট নিশ্চিত করে রেখেছিল ব্রাজিল। অবশিষ্ট স্থানের জন্য আজ লড়েছে বাকি ৩ দল- ক্যামেরুন, সুইজারল্যান্ড ও সার্বিয়া। যদিও ক্যামেরুনের বিপক্ষে ব্রাজিলের ম্যাচটি ছিল শুধুই নিয়মরক্ষার, কিন্তু নকআউটে ওঠার জন্য জয় প্রয়োজন ছিল সুইজারল্যান্ড ও সার্বিয়া দু’দলেরই। নিয়মরক্ষার ম্যাচে ১-০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে ক্যামেরুন। তারপরেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নকআউটে উঠেছে ব্রাজিল।

সুপার ১৬ বাঁচাতে আজ তুমুল লড়াই হয়েছে সার্বিয়া ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে। ম্যাচের ২০তম মিনিটেই জার্দান শাকিরির গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সুইজারল্যান্ড। জিবরিল সোওয়ের বাড়ানো পাসে বাম পায়ের জোরালো এক শটে শাকিরি বল জড়ান সার্বিয়ার জালে। ৩১ বছর বয়সী এই সুইস উইংগার বরাবরই দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করেন। আজকের গোলটির ফলে চলতি বিশ্বকাপসহ শেষ পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেই গোল করলেন শাকিরি। শাকিরি ছাড়া এ রেকর্ড কেবল আরেকজনেরই রয়েছে, তিনি পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।

অবশ্য সুইজারল্যান্ড বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি। ২৫ মিনিটের মাথায়ই স্ট্রাইকার আলেক্সান্দার মিত্রোভিচের গোলে সমতায় ফেরে সার্বিয়া। ডুসান তাদিচের বাড়ানো ক্রসে মাথা ঠেকিয়ে দারুণ এক গোল করেন তিনি।

১০ মিনিট পর আবারো গোল করে সার্বিয়া। ডুসান তাদিচের পাস বক্সে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন সুইস ডিফেন্ডার রেমো ফ্রয়লার। আলগা বল পেয়ে নিচু করে নেয়া এক শটে গোল করেন ডুসান ভ্লাহোভিচ। ফলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় সার্বিয়া। এ পর্যন্ত সার্বিয়ার হয়ে ১৯ ম্যাচে ১০টি গোল করেছেন ভ্লাহোভিচ।

প্রথমার্ধের প্রায় শেষ মুহূর্তে, ৪৪ মিনিটের মাথায় নাটকীয়ভাবে সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড। রাইট ফ্ল্যাংক থেকে সিলভান উইডমারের বাড়ানো বলে গোল করেন সুইস স্ট্রাইকার ব্রেল এম্বেলো। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয় গোল।

চার গোলের রোমাঞ্চকর, জমজমাট প্রথমার্ধের উত্তাপ অনেকাংশেই বজায় থাকে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও। ৪৮তম মিনিটে আবারো লিড পেয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। রুবেন ভারগাসের বাড়ানো বলে গোল করে দলকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন রেমো ফ্রেউলার।

৬০ মিনিটের মাথায় আবারো সুযোগ তৈরি হয়েছিল সার্বিয়ার জন্য। বাম দিকে কস্টিকের মারা ক্রস প্রায় গোলপোস্টে ঢুকেই যাচ্ছিল। তবে দ্রুত ডুসান তাদিচ সেই বল ক্লিয়ার করেন।

এরপর দুই দলেই আসে বেশকিছু পরিবর্তন। ৬৬ মিনিটের মাথায় মিত্রোভিচ একবার কৌশলী হয়ে পেনাল্টি আদায়ের চেষ্টা করলেও সফল হননি। খেলার এই পর্যায়ে ধীরে ধীরে সার্বিয়ার খেলোয়াড়দের খেলা ও অভিব্যক্তিতে হতাশার ছাপ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠতে শুরু করে।

আর একেবারে শেষের দিকে আরো এক গোল দিতে পারত সুইজারল্যান্ড। ফার্নান্দেজ থ্রো বল ছুড়ে দিয়েছিলেন মাঠের বা প্রান্তে থাকা ফ্যাশনটের দিকে। তবে তিনি কিছু করে ওঠার আগেই সার্বিয়ান খেলোয়াড় ভ্যাঞ্জা মিলিনকোভিচ-সাভিচ দৌড়ে এসে কোনো অঘটন ঘটার আগেই সে গোলের সুযোগ নষ্ট করে দেন। নইলে ব্যবধান আরো বাড়ত। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত ১০ মিনিটেও আর কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ জিতে নেয় সুইজারল্যান্ড। বিপরীতে গ্রুপের তলানিতে থেকে সার্বিয়ার বিশ্বকাপ মিশন এবারের মতো এখানেই শেষ হলো।