ভারতীয় শিক্ষার্থীরা কেন আত্মহত্যা করছে?

ভারতীয় শিক্ষার্থীরা কেন আত্মহত্যা করছে?

প্রতীকী ছবি

ভারতে কোটায় পড়া শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই আবহে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে রাজস্থানের অশোক গেহলট সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা করেছে গত সপ্তাহে। ছাত্র আত্মহত্যার প্রধান ছয়টি কারণ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

মাধ্যমিকের পরই দেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থী কোটার টিকিট কাটে। রাজস্থানের এই শহর গোটা দেশের শিক্ষামহলের কাছেই অতি পরিচিত একটি নাম। ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিক্যাল প্রবেশিকার প্রস্তুতির জন্যই এই শহরে পা রাখেন লাখ লাখ শিক্ষার্থী। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছাত্রদের আত্মহত্যার জন্য আলোচিত হচ্ছে কোটাযর নাম। গত এক বছরে শুধু কোটা শহরেই ২৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। কোটায় পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এই আবহে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে রাজস্থানের অশোক গেহলট সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা করেছে গত সপ্তাহে। 

কোটা শহর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পরিচিত। এই শহরে থাকা শিক্ষার্থীদেরর বেশিরভাগই ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যালের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মধ্যে বেশিরভাগ ছাত্রই জেইই এবং এনইইটি-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই দু'টি পরীক্ষাকে দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে গণ্য করা হয়। প্রতি বছর লাখ লাখ শিশু এর জন্য প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সুযোগ পায়।

প্রকৃতপক্ষে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যার তুলনায় দেশে আসন সংখ্যা অনেক কম। এ কারণেই বহু বছর ধরে একটানা প্রস্তুতির পরও সুযোগ না পেয়ে বহু শিক্ষার্থীরা এমন আত্মঘাতী পদক্ষেপ নেয়। অনেকেই এই চাপ নিতে পারে না।

এই আবহে ছাত্রদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে রিপোর্টে বলা হয়েছে:

কোটায়, শিক্ষার্থীরা জেইই এবং এনইইটি -এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই দু'টি পরীক্ষার সিলেবাস বেশ বড় এবং কঠিন। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের ওপর পড়াশোনার অনেক চাপ থাকে। এই চাপের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর অভিভাবকদের প্রত্যাশার বোঝাও থাকে। যা এই শিক্ষার্থীদের জন্য বিপজ্জনক এবং আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার অন্যতম কারণ এটি।

প্রতিবেদন কমিটি বলেছে, শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের থেকে একটানা অনেকটা সময় দূরে থাকে। এটাও আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণ। এ ছাড়া সঠিক কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ সামাল দিতে পারে না। তাদের আচরণে কোনো পরিবর্তন হলে তা কারও নজরেও পড়ে না। আর এই কারণেই অনেক সময় শিক্ষার্থীরা এমন পদক্ষেপ নেয়।

কমিটি প্রতিবেদনে বলেছে, কোচিংয়ে নেয়া পরীক্ষা এবং সেসব পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিশুদের ব্যাচ নির্ধারণ করা হয়। কমিটির মতে, এর কারণে শিশুদের ওপর মানসিক চাপ থাকে এবং অনেক সময় তারা ভুল পদক্ষেপ নেয়।

কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, কোচিং ইনস্টিটিউটের ব্যস্ত ক্লাস শিডিউল এবং তাদের বিশাল সিলেবাসও শিশুদের আত্মহত্যার কারণ হচ্ছে।

এদিকে কোচিং ক্লাসগুলোতে ছুটি নেই। এই কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর অনেক বেশি চাপ পড়ছে। আর সেটাই আত্মহত্যার অ্যতম বড় কারণ বলে দাবি করা হয়েছে কমিটির রিপোর্টে। কমিটির মতে, এত পড়াশোনার চাপের মাঝে ছুটি না থাকায় শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস