সাইবার হামলার শিকার বহু প্রতিষ্ঠান

সাইবার হামলার শিকার বহু প্রতিষ্ঠান

ফাইল ছবি

দেশে ইন্টারনেট নিয়ে ভোগান্তির মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। সাইবার নীতিমালা, দুর্বল অবকাঠামো আর সচেতনতার অভাবে হ্যাকিংয়ের মতো ঘটনা ঘটছে।

আর বাছবিচার ছাড়াই ফ্রি ভিপিএনের মতো ক্ষতিকারক মোবাইল অ্যাপও এ পালে হাওয়া জোগাচ্ছে। এদিকে, গেলো ২২ জুলাই হঠাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেখা যায় হ্যাকিং বাই দা রেসিস্টেন্স নামের একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। প্রায় একই সময় রাষ্ট্রীয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার ওয়েবসাইটে দেখা যায় এ বার্তা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট হ্যাকারদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলেও এখনও প্রতিনিয়ত সাইবার হামলার শিকার হচ্ছে শেয়ারবাজারসহ দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। সাইবার হামলার আশঙ্কায় শুক্র-শনিবার বন্ধ ছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটও।

তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলছে, হ্যাকাররা আগে থেকেই বিভিন্ন স্প্যাম ম্যাসেজ বা পেলোড দিয়ে ঘাপটি মেরে বসে ছিল। ইন্টারনেট না থাকা আর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে হ্যাকাররা।

ইন্টারনেট না থাকা আর দেশের অস্থিতিশীল অবস্থার সুযোগ নিয়ে সাইবার হামালার শিকার হয়েছে দেশের ব্যাংক, শেয়ারবাজার, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ রাষ্ট্রীয় সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট। সবচেয়ে বেশি সাইবার হামলা এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। চীন, ভারত, ইউক্রেন ও হংকং থেকেও হয়েছে হামলা।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, হ্যাকারদের দুটি ভাগ আছে। একটি হলো দেশের স্থানীয় হ্যাকার, অন্যটি প্রবাসী। প্রবাসে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অনেক স্ট্রং টুলস কেনা যায়। যে টুলসগুলো দিয়ে যেকোনো অবকাঠামো আক্রমণ করা যায়।

সাইবার হামলা পরিমাপক এই সফটওয়্যারে দেখা যাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে সাইবার হামলা চলছে। রাতে এর মাত্রা বেড়ে যায়। এসবের অন্যতম টার্গেট ব্যাংকসহ দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

তানভীর হাসান জোহা বলেন, রাষ্ট্রের এই সঙ্কটে আমরা যাদের সঙ্গে কাজ করি সেখানে দেখেছি ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময়ও ব্যাপক আক্রমণ ঘটেছে। হ্যাকাররা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে, যখনই ইন্টারনেট সচল হয় তখনই দৃশ্যমান আক্রমণগুলো আমরা দেখেছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকায় দেশে ভিপিএনের ব্যবহার বেড়েছে। এটিও ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

আরেক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বলেন, ফ্রি ভিপিএন যদি বাছবিচার ছাড়া অতিরিক্ত ব্যবহার হয় তাহলে পুরো নেটওয়ার্ক হ্যাজাড হয়ে যেতে পারে। যারা এই নেটওয়ার্কে যুক্ত আছে হ্যাজার্ডের ঝুঁকিতে সেই প্রতিষ্ঠানই পড়তে পারে।

তিনি বলেন, এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যেটি জরুরি দরকার, সেটি হলো তাদের নিজস্ব ভিপিএন তৈরি করতে হবে।

স্মার্ট পুলিশিং যদি আমরা যুক্ত করতে না পারি তাহলে এই প্রযুক্তিগুলো পরবর্তীতে আমাদের সুবিধার থেকে অসুবিধাই বেশি হবে এবং আমরা সর্বস্ব হারিয়ে ফেলতে পারি, যোগ করেন তানভীর হাসান জোহা।

তথ্যে ও উপাত্তের সুরক্ষায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সচেতন ও পেশাদার হতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।