বেলজিয়ামকে হারিয়ে স্লোভাকিয়ার ‘অঘটন’

বেলজিয়ামকে হারিয়ে স্লোভাকিয়ার ‘অঘটন’

সংগৃহীত

প্রতিপক্ষের ভুলে শুরুতেই গোল আদায় করে নিল স্লোভাকিয়া। এগিয়ে যাওয়ার পর আরও উজ্জীবিত ফুটবল খেলল তারা। বিবর্ণতার খোলস ছেড়ে বের হতে মরিয়া চেষ্টা করল বেলজিয়াম, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত জালের দেখা পেল না। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সেরা অঘটনগুলোর একটির জন্ম দিল স্লোভাকিয়া। লিখল নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় এক জয়ের গল্প।

জার্মানির স্টুটগার্টে সোমবার (১৭ জুন) ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে স্লোভাকিয়া। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটি করেছেন ইভান শারাঞ্জ। বেলজিয়ামের বিপক্ষে এটাই তাদের প্রথম জয়। শক্তি-সামর্থ্যে তো বটেই, বর্তমানে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও এই দুই দলের মাঝে বিস্তর ফারাক। স্লোভাকিয়ার যেখানে র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ৪৮ নম্বরে, সেখানে বেলজিয়াম আছে তৃতীয় স্থানে, মাঝে দীর্ঘদিন তো তারা ছিল চূড়ায়।

এদিনের লড়াইয়ের আগেও বেলজিয়ামকে ধরা হচ্ছিল নিশ্চিত ফেভারিট; কিন্তু মাঠে সব পাল্টে গেল। বাছাইপর্বে রেকর্ড সংখ্যক গোল করা লুকাকু দুইবার জালের দেখা পান, তবে ভিএআরে দুইবারই তা বাতিল হয়ে যায়। দুই দলের আগের তিন দেখায় বেলজিয়ামের জয় ছিল একটি। বাকি দুই ম্যাচ হয়েছিল ড্র। গত ফেব্রুয়ারিতেই প্রীতি ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয় পেয়েছিল বেলজিয়াম; ২-১ ব্যবধানে। জুন মাসে এসেই উল্টো অভিজ্ঞতা হলো তাদের।

এদিন শুরু থেকে বেলজিয়ামের চোখে চোখ রেখে খেলতে থাকে স্লোভাকিয়া। সপ্তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোলও আদায় করে নেয় প্রতিযোগিতার ১৯৭৬ সালের চ্যাম্পিয়ন। নিজেদের বক্সে সতীর্থের বাড়ানো দুর্বল পাস ছুটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি জেরেমি ডোকু, বল পেয়ে ব্যাকপাস দেন ইভান শারাঞ্জ। ইউরাই কুচকার জোরাল শট ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি গোলরক্ষক, আলগা বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন ফরোয়ার্ড শারাঞ্জ।

১৬তম মিনিটে কেভিন ডে ব্রুইনের পাস ধরে ডোকুর নেওয়া শট প্রতিহত হয় রক্ষণে। পাঁচ মিনিট পর লেসান্দ্রো ত্রোসার্দের শট উড়ে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। ৩১তম মিনিটে রবার্ট বোজেনিকের ডান পায়ের শট আটকে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে দেননি গোলরক্ষক কুস কাস্তেল্স। পাঁচ মিনিট পর ডে ব্রুইনের ক্রসে আমাদু ওনানার হেড পারেনি বেলজিয়ামকে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ এনে দিতে। ৪০তম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করেন কাস্তেল্স। লুকাস হারাসলিনের জোরাল শট কোনোমতে ঝাঁপিয়ে এক হাতে ফেরান তিনি।

৫৬তম মিনিটে হেডে জালে বল জড়িয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন লুকাকু, কিন্তু ভিএআরের চেকে ধরা পড়ে অফসাইডে ছিলেন তিনি। ছয় মিনিট পর বেলজিয়ামের হতাশা বাড়ে আরও। ডান দিক থেকে আসা ক্রস আটকালেও বল গ্লাভসে জমাতে পারেননি কাস্তেল্স। বল চলে যায় ইয়োহান বুকায়োর পায়ে; তার ফিরতি শট গোললাইন থেকে ফেরান ডেভিড হাঙ্কো।

ভিএআরের সিদ্ধান্তে ৮৬তম মিনিটে আরেক দফা হতাশা সঙ্গী হয় বেলজিয়ামের। বাইলাইনের একটু ওপর থেকে সতীর্থের বাড়ানো কাটব্যাকে বল পেয়ে জোরাল শটে বল জালে পাঠান লুকাকু, নেচে ওঠে বেলজিয়ামের ডাগআউট। তবে আক্রমণের শুরুতে ওপেন্ডার সম্ভাব্য হ্যান্ডবলের দাবি তোলে স্লোভাকিয়া, ভিএআর মনিটরে দেখে গোল না দিয়ে হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান রেফারি। হারের হতাশা সঙ্গী করে মাঠ ছাড়তে হলো বেলজিয়ামকে।